Мы используем файлы cookie.
Продолжая использовать сайт, вы даете свое согласие на работу с этими файлами.

অর্শরোগ

Подписчиков: 0, рейтинг: 0
অর্শরোগ
Internal and external hemorrhoids.png
বিশেষত্ব সাধারণ অস্ত্রোপচার উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

অর্শরোগ (ইংরেজি: Haemorrhoids, মার্কিন ইংরেজিতে Hemorrhoids, হেমোরয়েডস) ইউকে: /ˈhɛmərɔɪdz/, হল পায়ূ পথে বিদ্যমান অঙ্গ রক্তনালী যা মল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।ফোলা বা প্রদাহ থেকে এগুলো রোগ সংক্রান্ত বিষয় বা পাইলস-এ পরিণত হয়। শারীরবৃত্তীয় পর্যায়ে এগুলো ধমনী-শিরা পথ এবং যোজক কলা দ্বারা গঠিত কুশনের ন্যায় কাজ করে।


অস্বাভাবিক অর্শরোগের উপসর্গ এর ধরনের ওপর নির্ভরশীল। সাধারণত অভ্যন্তরীণ অর্শরোগের ক্ষেত্রে মলদ্বারে রক্তপাত লক্ষ করা যায় যা বেদনাবিহীন। আর বাহ্যিক অর্শরোগ হলে কয়েকটি উপসর্গ দেখা দিতে বা থ্রমবোজড (রক্তনালীতে গঠিত) হলে তা মলদ্বার অঞ্চলে লক্ষণীয় মাত্রায় ব্যথা ও স্ফীতির কারণ হতে পারে। অনেক লোক পায়ূ-মলদ্বার অঞ্চলের চারদিকে যে কোনো উপসর্গ দেখা দিলেই তা “হেমোরয়েডস” ভেবে ভুল করে, যেগুলোকে উপসর্গের মারত্মক কারণ হিসাবে উপেক্ষা করা উচিত।হেমোরয়েডস এর প্রকৃত কারণ অজানা থাকলেও পেটের ভিতরে চাপ বৃদ্ধির নানা কারণ, বিশেষ করে কোষ্ঠকাঠিন্য এর পিছনে ভূমিকা রাখে বলে ধারণা করা হয়।

প্রাথমিকভাবে রোগের হালকা থেকে মাঝারি পর্যায়ে চিকিৎসা হিসাবে রয়েছে আঁশ গ্রহণ, জলযোজন বজায় রাখতে মুখ দিয়ে তরল গ্রহণ, ব্যথা কমাতে এনএসএআইডি (স্টেরয়েড বহির্ভূত প্রদাহ নাশক ওষুধ) এবং বিশ্রাম। উপসর্গ গুরুতর হলে বা তা থেকে সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ সত্ত্বেও উন্নতি না হলে ছোটোখাটো কয়েকটি পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে। এসব পদ্ধতি অবলম্বনের পর কারো উন্নতি না হলে তাদের জন্য রয়েছে শল্যচিকিৎসা। জনসংখ্যার অর্ধেকই জীবনের কোনো পর্যায়ে হেমোরয়েডস সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগতে পারে। চিকিৎসায় সচরাচর ভালো ফল হয়।

লক্ষণ ও উপসর্গ

বাহ্যিক হেমোরয়েডস মানুষের মলদ্বারের চারদিকে যেমন দেখা যায়

অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক হেমোরয়েডস আলাদাভাবে দেখা দিতে পারে; তবে অনেকের মধ্যে এই দু’টির সমন্বয় দেখা যায়।রক্তাল্পতা দেখা দেওয়ার মত এতটা রক্তপাত তেমন একটা দেখা যায় না, এবং জীবনের জন্য হুমকি হতে পারে এতটা রক্তপাত আরও বিরল। সমস্যা দেখা দিলে অনেক লোকই বিব্রত বোধ করে এবং কেবল রোগের যথেষ্ট বিস্তারের পরই চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে।

বাহ্যিক

থ্রমবোজড না হলে, বাহ্যিক হেমোরয়েডস কিছু সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তবে, থ্রমবোজড বা রক্তনালীতে গঠিত হলে হেমোরয়েডস অত্যন্ত বেদনাদায়ক হতে পারে। তবে ২ – ৩ দিনেই এই ব্যথা সেরে যায়। তা সত্ত্বেও স্ফীতির অবসান হতে কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে। সুস্থতার পরও স্কিন ট্যাগ থেকে যেতে পারে। হেমোরয়েডস বড় আকারের ও অস্বাস্থ্যকর হলে চারদিকের ত্বকে অস্বস্তি ও মলদ্বারের চারপাশে চুলকানি হতে পারে।

অভ্যন্তরীণ

অভ্যন্তরীণ হেমোরয়েডস হলে সচরাচর অন্ত্রের আন্দোলনের আগে বা পরে বেদনাহীন, উজ্জ্বল লাল রেকটাল ব্লিডিং (মলদ্বারে রক্তপাত) হতে পারে। মল রক্ত দ্বারা আবৃত থাকতে পারে, যে অবস্থাকে হেমাটোকেজিয়া বলে। এক্ষেত্রে টয়লেট পেপারে রক্ত দেখা যেতে পারে বা টয়লেটেও রক্তের ফোঁটা ঝরতে পারে। মলের রঙ সচরাচর স্বাভাবিক হয়। অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে রয়েছে শ্লৈষ্মিক স্রাব, মলদ্বারের চারদিকের অংশ পায়ুপথে বেরিয়ে আসা, চুলকানি, ও ফেসাল ইনকনটিনেন্স (পায়ুপথে গ্যাস বা মল নির্গমনের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণহীনতা)। কেবল থ্রমবোজড বা রক্তনালীতে গঠিত হলে বা কলাবিনষ্টির ক্ষেত্রেই অভ্যন্তরীণ হেমোরয়েডস বেদনাদায়ক হতে পারে।

কারণ

লাক্ষণিক হেমোরয়েডস এর কারণ জানা যায় নাই। এর পিছনে যেসব কারণ দায়ী বলে ধারণা করা হয় তার মধ্যে রয়েছে: অন্ত্রের সমস্যা (কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া), ব্যায়াম ও পুষ্টি উপাদানে ঘাটতি (স্বল্প-আঁশ সমৃদ্ধ খাবার), পেটের ভিতরে চাপ বৃদ্ধি (দীর্ঘায়িত চাপ), অ্যাসিটিস (পেটের গহ্বরে জমা নিঃসৃত তরল), পেটের ভিতরে বস্তু বা গর্ভাবস্থা), জন্মগত, হেমোরয়েড শিরায় কপাটিকার অনুপস্থিতি ও বার্ধক্য। অন্যান্য যেসব কারণ ঝুঁকি বৃদ্ধি করে বলে ধারণা করা হয় সেগুলোর মধ্যে রয়েছে স্থূলতা, দীর্ঘসময় বসে থাকা,দীর্ঘস্থায়ী কাশি এবং বস্তিদেশের কার্যক্রম বন্ধ। তবে এসব কারণের স্বপক্ষে সামান্য প্রমাণই পাওয়া যায়।

গর্ভাবস্থায়, তলপেটের ওপর ভ্রূণ এর চাপ ও হরমোনের পরিবর্তনের ফলে হেমোরয়েড রক্তনালী বর্ধিত হয়। প্রসবের কারণেও পেটের ভিতরে চাপ বৃদ্ধি পায়। প্রসবের পর সচরাচর উপসর্গ আর থাকে না বিধায় গর্ভবতী মহিলাদের শল্যচিকিৎসা লাগে না বললেই চলে।

রোগ ও শরীরবৃত্ত

হেমোরয়েড কুশন হল স্বাভাবিক মানব শরীরের অংশ ও তাতে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দিলেই কেবল তা বিকার বা রোগগত বিষয়ে পরিণত হয়। স্বাভাবিক পায়ু পথে প্রধান তিনটি কুশন থাকে। এগুলি বাম পার্শ্বে, ডানদিকে সম্মুখভাগে ও ডানদিকে পিছনে অবস্থিত। এগুলি ধমনী বা শিরা দ্বারা গঠিত নয়, তবে সাইনোসয়েডস নামক রক্তনালী, যোজক কলামসৃণ কলা দ্বারা গঠিত। সাইনোসয়েডের প্রাচীরে শিরা-প্রাচীরের ন্যায় কোনো পেশী কলা নাই। এই রক্ত নালীগুলো হেমোরয়ডাল প্লেক্সাস (হেমোরয়েডের জাল) হিসাবে পরিচিত।

কনটিনেন্স (পায়ুপথে গ্যাস বা মল নির্গমনের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ বা নিয়ন্ত্রণহীনতা) এর জন্য হেমোরয়েড কুশন গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো বিশ্রামের সময় পায়ূ বন্ধের চাপের ক্ষেত্রে ১৫-২০% অবদান রাখে ও মল নির্গমনের সময় অ্যানাল স্ফিঙ্কটার কলাকে (পায়ু বেষ্টনকারী রিং আকারের মসৃণ পেশী, স্বাভাবিক অবস্থায় যা পায়ু পথকে সংকুচিত রাখে) সুরক্ষা দেয়। কোনো ব্যক্তি চাপ সহ্য করার সময় পেটের ভিতর চাপ বৃদ্ধি পায় ও হেমোরয়েড কুশনের আকার বেড়ে পায়ু বন্ধ রাখতে সহায়তা করে। ধারণা করা হয় যে, এসব রক্তনালী নিচের দিকে নেমে গেলে বা শিরার চাপ খুব বেড়ে গেলে হেমোরয়েডের উপসর্গ দেখা দেয়।অ্যানাল স্ফিঙ্কটার এর বর্ধিত চাপও হেমোরয়েডের উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে। দুই ধরনের হেমোরয়েড হতে পারে: অভ্যন্তরীণ, যা সুপিরিয়র হেমোরয়ডাল প্লেক্সাস থেকে ও বাহ্যিক, যা ইনফেরিয়র হেমোরয়ডাল প্লেক্সাস থেকে হয়। এই দুই অঞ্চলকে বিভক্ত করে ডেনটেট লাইন

রোগ নির্ণয়

Internal hemorrhoid grades
Grade Diagram Picture
1 Piles Grade 1.svg Endoscopic view
2 Piles Grade 2.svg Hemrrhoids 04.jpg
3 Piles Grade 3.svg Hemrrhoids 05.jpg
4 Piles Grade 4.svg Piles 4th deg 01.jpg

শারিরীক পরীক্ষার মাধ্যমে হেমোরয়েড নির্ণয় করা হয়। পায়ু ও এর আশে পাশের এলাকা ভালভাবে দেখে বা পরীক্ষা করে বাহ্যিক বা স্থানচ্যুত হেমোরয়েড নির্ণয় করা যেতে পারে। মলদ্বারের টিউমার, পলিপ, বর্ধিত প্রস্টেট, বা ফোড়া শনাক্ত করতে মলদ্বার পরীক্ষা করা যেতে পারে। ব্যথার কারণে উপযুক্ত ঘুমের ওষধ বা ব্যথা-নাশক ছাড়া এই পরীক্ষা করা সম্ভব নাও হতে পারে, যদিও বেশির ভাগ অভ্যন্তরীণ হেমোরয়েডের সঙ্গে ব্যথার সংশ্লিষ্টতা নেই। চোখে দেখে অভ্যন্তরীণ হেমোরয়েড নিশ্চিত করতে অ্যানোস্কপি প্রয়োজন হতে পারে। এটি হল এক প্রান্তে লাইট বা আলোর উৎস সংযুক্ত একটি ফাঁকা নল। দুই ধরনের হেমোরয়েড আছে: বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ। ডেনটেট লাইন থেকে অবস্থানের প্রেক্ষিতে এগুলো পৃথক হয়। কারো কারো মধ্যে একইসঙ্গে উভয়টির উপসর্গ দেখা যেতে পারে। ব্যথা থাকলে সেক্ষেত্রে এটি অভ্যন্তরীণ হেমোরয়েডের পরিবর্তে অ্যানাল ফিশার বা বাহ্যিক হেমোরয়েড হবার সম্ভাবনাই বেশি।

অভ্যন্তরীণ

ডেনটেট লাইন এর ওপরে সৃষ্ট হেমোরয়েড হল অভ্যন্তরীণ হেমোরয়েড। এগুলো স্তম্ভাকার এমিথেলিয়াম দ্বারা আবৃত থাকে, যাতে ব্যথা সংবেদী স্নায়ু থাকে না।স্থানচ্যুতি'র মাত্রার ওপর ভিত্তি করে ১৯৮৫ সালে এগুলোকে চার শ্রেণীতে ভাগ করা হয়।

  • গ্রেড I: স্থানচ্যুত হয় না, কেবল রক্তনালীগুলো প্রকট থাকে।
  • গ্রেড II: নিন্মমুখী চাপে স্থানচ্যুত হয়, তবে তা আপনা আপনি কমে ঠিক হয়ে আসে।
  • গ্রেড III: নিন্মমুখী চাপে স্থানচ্যুত হয় এবং হাত দিয়ে ঠিক করতে হয়।
  • গ্রেড IV: স্থানচ্যুত হয় এবং তা ঠিক করা যায় না।

বাহ্যিক

থ্রমবোজড বাহ্যিক হেমোরয়েড

ডেনটেট বা পেকটিনেট লাইন এর নিচে সৃষ্ট হেমোরয়েড হল বাহ্যিক হেমোরয়েড। এগুলো কাছাকাছি অ্যানোডার্ম এবং দূরে ত্বক দ্বারা আবৃত থাকে, যার দু’টোই ব্যথা ও তাপে সংবেদী।

ভিন্নতা

ফিশার, ফিস্টুলা, ফোড়া, মলাশয় ও মলদ্বারের ক্যান্সার, রেক্টাল ভ্যারিক্স (মলদ্বারের রাক্তনালীর অস্বাভাবিক স্ফীতি) ও চুলকানি (মলদ্বারের চারদিকে দীর্ঘস্থায়ী চুলকানি) ইত্যাদি পায়ু ও মলদ্বারের অনেক সমস্যার উপসর্গ একইরকম এবং তা ভুলক্রমে হেমোরয়েড হিসাবে ধারণা করা হতে পারে। মলাশয় ও মলদ্বারের ক্যান্সার, প্রদাহযুক্ত পেটের রোগ, ডাইভার্টিকুলার ডিজিজ (অন্ত্র থেকে বেড়িয়ে আসা থলের ন্যায় কাঠামো), ও অ্যানজিয়োডিস্প্ল্যাজিয়া (রক্তনালীর সামান্য অস্বাভাবিকতা) ইত্যাদি মলাশয়-প্রদাহঘটিত রোগেও মলদ্বারে রক্তপাত হতে পারে।রক্তাল্পতা থাকলে অন্যান্য সম্ভাব্য কারণ বিবেচনায় আনতে হবে।

অন্যান্য যেসব ক্ষেত্রে মলদ্বারে বস্তু সৃষ্টি হয় তার মধ্যে রয়েছে: স্কিন ট্যাগ, মলদ্বারে আঁচিল, মলদ্বারের স্থানচ্যুতি, পলিপ ও পায়ুর বর্ধিত প্যাপিলা (স্তনের বোঁটার ন্যায় ক্ষুদ্র উদগম)।পোর্টাল হাইপারটেনশন (পোর্টাল ভেনাস সিস্টেম-এ রক্তচাপ) বৃদ্ধিজনিত অ্যানোরেক্টাল ভ্যারিক্স দেখা দিতে পারে। এগুলো হেমোরয়েডের মতই, তবে অবস্থাটা ভিন্ন।

প্রতিরোধ

এর বেশ কয়েকটি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সুপারিশ করা হয়ে থাকে, যার মধ্যে রয়েছে মলত্যাগের সময় জোরে চাপ না দেওয়া, উচ্চ আঁশ যুক্ত খাদ্য ও প্রচুর তরল বা আঁশের সম্পূরক খাবার গ্রহণের মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়া পরিহার এবং পর্যাপ্ত ব্যায়াম করা।মলত্যাগকালে অল্প সময় ব্যয়, টয়লেটে বসে পড়া বন্ধ করা, এবং অতিরিক্ত ওজনের ব্যক্তিদের ওজন কমানো ও খুব ভারি বস্তু উত্তোলন পরিহার করাও সুপারিশ করা হয়।

ব্যবস্থাপনা

রক্ষণশীল

সাধারণত রক্ষণশীল চিকিৎসায় রয়েছে আঁশযুক্ত খাবারসহ পুষ্টিবর্ধক খাবার খাওয়া, জলযোজন বজায় রাখার জন্য মুখ দিয়ে তরল গ্রহণ, নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি ড্রাগ (এনএসএআইডি) অর্থাৎ স্টেরয়েড বহির্ভূত প্রদাহনাশক ওষুধ প্রয়োগ, সিৎজ বাথ এবং বিশ্রাম। দেখা গেছে যে বেশি মাত্রায় তন্তুসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া হলে ভালো ফল পাওয়া যায়, এবং আহার পরিবর্তন বা আঁশযুক্ত পরিপূরক খাওয়ার দ্বারা এটা করা সম্ভব। তবে, যে কোনো পর্যায়ে চিকিৎসায় সিৎজ বাথের উপকারিতার প্রমাণের অভাব আছে। এটা ব্যবহার করা হলেও তা একবারে ১৫ মিনিটে সীমিত রাখা উচিত।

যদিও অর্শ্বরোগ অর্থাৎ হেমোরয়েডের চিকিৎসায় বেশ কিছু স্থানীয় উপাদান ও সাপোজিটরি পাওয়া যায়, তবে এগুলি ব্যবহারের সমর্থনে যথেষ্ট প্রমাণের অভাব আছে। যেসব উপাদানে স্টেরয়েড থাকে সেগুলি ১৪ দিনের বেশি ব্যবহার করা উচিত না, কারণ তার ফলে ত্বক পাতলা হয়ে যেতে পারে। অধিকাংশ উপাদানে সক্রিয় উপকরণের সংমিশ্রণ থাকে। তাতে এগুলি থাকতে পারে: পেট্রোলিয়াম জেলি বা জিঙ্ক অক্সাইড-এর মত প্রতিরোধী ক্রিম, লিডোকেন-এর মত বেদনানাশক উপাদান এবং এপিনেফ্রিন-এর মত একটি ভাসোকনস্ট্রিকটার।ফ্ল্যাভোনয়েড-এর উপকারিতা সন্দেহজনক এবং এর ফলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণত গর্ভাবস্থার পরে উপসর্গগুলি চলে যায়, সুতরাং প্রসব না হওয়া পর্যন্ত প্রায়ই সক্রিয় চিকিৎসায বিল্মবিত করা হয়।

পদ্ধতি

একাধিক অফিস-ভিত্তিক পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়। সাধারণত নিরাপদ হলেও মলদ্বারে বিষক্রিয়া'র মত বিরল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় হতে পারে।

  • যাদের রোগ ১ থেকে ৩ পর্যায়ে আছে তাদের জন্য সাধারণত প্রথম চিকিৎসা হিসাবে রাবার ব্যান্ড লাইগেশন এর পরামর্শ দেওয়া হয়। এই পদ্ধতিতে অভ্যন্তরীণ হেমোরয়েডে ডেনটেট লাইন এর অন্তত ১ সেঃমিঃ ওপরে ইলাস্টিকের ব্যান্ড জডিয়ে দেওয়া হয় যাতে রক্ত সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া যায়। ৫–৭ দিনের মধ্যে, ঐ কুঞ্চিত হেমোরয়েড খসে পড়ে। ডেনটেট লাইনের খুব কাছে ব্যান্ড বাঁধা হলে পরে তীব্র যন্ত্রণা হয়। দেখা গেছে প্রায় ৮৭% ক্ষেত্রে রোগ সেরে ওঠে। এক্ষেত্রে ৩% পর্যন্ত জটিলতা দেখা দিতে পারে।
  • স্কলেরোথেরাপি’র ক্ষেত্রে হেমোরয়েডে ফেনল-এর মত স্ক্লেরোজিং উপাদান সমৃদ্ধ ইনজেকশন দেওয়া হয়। এর ফলে শিরার দেওয়ালে ভাঙ্গণ ধরে ও হেমোরয়েড কুঁচকে যায়। চার বছর চিকিৎসার পরে সাফল্যের হার ~৭০% যা রাবার ব্যান্ড লাইগেশনের চেয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি সন্তোষজনক।
  • হেমোরয়েডে বেশ কয়েকটি কটেরাইজেশন পদ্ধতি কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে, তবে অন্য সব পদ্ধতি ব্যর্থ হলে তবেই এটা প্রয়োগ করা হয়। ইলেক্ট্রোকটরি, ইনফ্রারেড বিকিরণ, লেজার ভিত্তিক শল্যচিকিৎসা বা ক্রায়োসার্জারি ব্যবহার করে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়। রোগের ১ বা ২ পর্যায়ে ইনফ্রারেড কটেরাইজেশন চিকিৎসা বিকল্প হতে পারে। যাদের রোগাবস্থা ৩ বা ৪ পর্যায়ে আছে তাদের রোগের পুনরাবির্ভাবের হার বেশি থাকে।

শল্যচিকিৎসা

রক্ষণশীল ব্যবস্থাপনা এবং সরল প্রণালী ব্যর্থ হলে একাধিক শল্যচিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়। মূত্রথলিতে সরবরাহকারী স্নায়ুর ঘনিষ্ঠ সংস্রবে মলদ্বার থাকার কারণে সব শল্যচিকিৎসার সঙ্গে রক্তপাত, সংক্রমণ, অ্যানাল স্ট্রিকচার অর্থাৎ মলদ্বারের অস্বাভাবিক সঙ্কীর্ণতা এবং প্রস্রাবধারণসহ কিছু জটিলতা জড়িত।ফেসাল ইনকনটিনেন্স অর্থাৎ নিয়ন্ত্রণহীনতার সামান্য ঝুঁকিও রয়েছে, বিশেষত তরলের ক্ষেত্রে, যা ০% থেকে ২৮% ক্ষেত্রে দেখা যায়। হেমোরয়েডেক্টমির পরে আরেকটি যে অবস্থা দেখা দিতে পারে তা হল শ্লৈষ্মিক ঝিল্লির এক্ট্রোপিয়ন (প্রায়ই অ্যানাল স্টেনোসিসের সঙ্গে)। এক্ষেত্রে শ্লৈষ্মিক ঝিল্লি মলদ্বার থেকে পায়ুপথের বাইরে বের হয়ে আসে, যা অতি মৃদু রেক্টাল প্রোল্যাপ্স-এর অনুরূপ।

  • এক্সিশনাল হেমোরয়েডেক্টমিতে শল্যচিকিৎসা দ্বারা হেমোরয়েড কেটে বাদ দেওয়া হয়, যা মূলত গুরুতর ক্ষেত্রে করা হয়। এর সঙ্গে অস্ত্রপচার-পরবর্তী তীব্র যন্ত্রণা জড়িত থাকে এবং সাধারণত সেরে উঠতে ২–৪ সপ্তাহ সময় লাগে। তবে, যাদের পর্যায় ৩ হেমোরয়েড রয়েছে তারা দীর্ঘমেয়াদে এতে রাবার ব্যান্ড লাইগেশনের তুলনায় অধিক উপকার পাবে। যাদের বাহ্যিক থ্রমবোজড হেমোরয়েড রয়েছে তাদের ২৪–৭২ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা করা হলে এই চিকিৎসা পদ্ধতির পরামর্শ দেওয়া হয়। এই পদ্ধতির পর গ্লিসারিলট্রাইনাইট্রেট মলম যন্ত্রণার উপশম ও আরোগ্যলাভ উভয় ক্ষেত্রেই সাহায্য করে।
  • ডপলার-নির্দেশিত ট্রান্স্যানাল হেমোরয়ডাল দিয়ার্তেরিয়ালাইজেশন হল যৎসামান্য হস্তক্ষেপ ভিত্তিক চিকিৎসাপদ্ধতি, যেখানে একটি আল্ট্রাসাউন্ড ডপলারের সাহায্যে নির্ভুলভাবে ধমনী দিয়ে রক্ত পড়ার স্থান শনাক্ত করা হয়। তারপর ঐ ধমনী "বেঁধে দেওয়া" হয় ও স্থানচ্যুত কলা পুনরায় স্বাভাবিক স্থানে বসিয়ে সেলাই করে দেওয়া হয়। এতে পুনরাবির্ভাবের হার সামান্য বেশি হলেও হেমোরয়েডেক্টমি'র তুলনায় কম জটিলতা থাকে।
  • স্টেপলড হেমোরয়েডেক্টমি স্টেপলড হেমোরয়েডোপেক্সি হিসাবেও পরিচিত। এটি এমন এক পদ্ধতি যাতে অধিকাংশ অস্বাভাবিক বড় হয়ে ওঠা হেমোরয়েডের কলা বাদ দিয়ে দেওয়া হয় ও তার পরে অবশিষ্ট হেমোরয়েডের কলা স্বাভাবিক শারীরিক অবস্থানে পুনরায় বসিয়ে দেওয়া হয়। সাধারণত এটা কম যন্ত্রণাদায়ক এবং হেমোরয়েড সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে দেওয়ার তুলনায় এতে দ্রুত সেরে ওঠা যায়। তবে, প্রথাগত হেমোরয়েডেক্টমি'র তুলনায় এই লক্ষণমূলক হেমোরয়েড পুনরায় দেখা দেওয়ার বেশি সম্ভাবনা থাকে এবং তাই সাধারণত কেবলমাত্র রোগের ২ বা ৩ পর্যায়ে এর পরামর্শ দেওয়া হয়।

রোগবিস্তার

হেমোরয়েডের প্রকোপ কতটা বিস্তৃত তা বলা কঠিন কেননা অনেকে এই অবস্থায়ও স্বাস্থ্য পরিচর্যাকারীর কাছে যান না। তবে, ধারণা করা হয় যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্ততপক্ষে ৫০% জনসাধারণ তাদের জীবদ্দশায় কখনও না কখনও লক্ষণমূলক হেমোরয়েডে আক্রান্ত হন এবং যে কোনো সময় জনগণের প্রায় ~৫% এতে আক্রান্ত থাকে। নারী পুরুষ উভয়েই প্রায় একই হারে এতে আক্রান্ত হয় এবং ৪৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সের মধ্যে এটা বেশি অণুপাতে ঘটে।ককেশিয়ান এবং আর্থসামাজিকভাবে বেশি অবস্থাপন্ন মানুষের মধ্যে এটা বেশি দেখা যায়। সাধারণত দীর্ঘকালে পরিণাম সন্তোষজনক হলেও অনেকের ক্ষেত্রে বারবার লক্ষণমূলক উপসর্গের পুনরাবির্ভাব দেখা দেয়। খুব অল্প সংখ্যক মানুষের শল্য চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।

ইতিহাস

১১ শতকে ইংল্যান্ডে শল্যচিকিৎসার ক্ষুদ্রচিত্র। ডানদিকে হেমোরয়েড বাদ দেওয়ার অপারেশন করা হচ্ছে।

খৃষ্টপূর্ব ১৭০০ সালে মিশরের একটি প্যাপিরাস কাগজে এই অসুখের প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়, সেখানে যে পরামর্শ দেওয়া হয় তা হল: “…একটি ঔষধই প্রয়োগ করবেন, যা বিশেষ সুরক্ষাদায়ক মলম; বাবলা গাছের পাতা, মাটি, মিহি গুঁড়া করে একত্রে জাল দিতে হয়। এক ফালি অতি সূক্ষ্ম লিলেন কাপড়ে এটি মেখে মলদ্বারে রাখতে হবে, এতে অবিলম্বে রোগ নিরাময় হবে।" খৃষ্টপূর্ব ৪৬০ সালে হিপোক্রেটিক কর্পাস-এ আধুনিক কালের রাবার ব্যান্ড লাইগেশনের অনুরূপ একটি চিকিৎসা পদ্ধতি আলোচনা করা হয়েছে: “এবং একই ভাবে হেমোরয়েডের চিকিৎসায় তা সুচ দ্বারা ছিদ্র করে খুব পুরু উলের সূতা দিয়ে বেঁধে রাখুন, যতক্ষণ ঝড়ে না পড়ে ততক্ষণ এটি নাড়াচাড়া না করে রেখে দিন। রোগী সুস্থবোধ করলে তাকে এক হেলিবোর ভেষজ ওষুধের একটি কোর্স দিন।”বাইবেল-এ হেমোরয়েডের উল্লেখ পাওয়া যায়।

সেলসাস-এ (খৃষ্টপূর্ব 25 –14 খৃষ্টাব্দ) লাইগেশন বা বাঁধা ও এক্সিশন বা কর্তন প্রণালীর বর্ণনা এবং এসব ক্ষেত্রে সম্ভাব্য জটিলতার উল্লেখ রয়েছে।গালেন যন্ত্রণা ও পচন উভয়ই কম হয় বলে দাবি করে রক্তধমনীর সঙ্গে শিরার যোগসূত্র কেটে বাদ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।সুশ্রুত সংহিতায় (খৃষ্টাব্দ চতুর্থ – পঞ্চম শতক) হিপোক্রেটসের মন্তব্যের অনুরূপ মন্তব্য করা হয়, তবে এতে ক্ষতস্থান পরিষ্কার রাখার বিষয়ে গুরুত্ব প্রদান করা হয়।লাঁফ্রাঙ্ক অভ মিলান, গায় দি শলিয়া, হেনরি দি মন্ডেভিলে এবং জন অভ আরডেন এর মত ১৩ শতকের ইউরোপের শল্যচিকিৎসকরা শল্যচিকিৎসা পদ্ধতির লক্ষণীয় উন্নয়ন ও বিকাশ সাধন করেন।

ইংরেজিতে ১৩৯৮ সালে সর্বপ্রথম "হেমোরয়েড" শব্দটি ব্যবহার করা হয়, এটি পুরাতন ফরাসি "এমোরয়েদস", লাতিন "হেমোরইদা-য়ে" (]] "hæmorrhoida -ae") থেকে উদ্ভূত, যা গ্রিক "αἱμορροΐς" (হেমোরইস), "রক্তক্ষরণের জন্য দায়ী ", "αἷμα" (হাইমা), "রক্ত" + "ῥόος" (রুস), “স্রোত, প্রবাহ, ধারা” শব্দ থেকে নেয়া হয় যা আবার "ῥέω" (rheo), "প্রবাহিত হওয়া, ভেসে যাওয়া" শব্দ থেকে উদ্ভূত।

উল্লেখযোগ্য উদাহরণ

বিখ্যাত বেসবল খেলোয়াড় জর্জ ব্রেটকে হেমোরয়েডের যন্ত্রণার জন্য ১৯৮০ বিশ্ব সিরিজ -এর একটি খেলা থেকে বাদ দিতে হয়েছিল। একটি ছোট শল্যচিকিৎসার পরে ব্রেট যখন পরের খেলায় যোগ দিতে ফিরে আসেন, তিনি পরিহাস করে বলেছিলেন "...আমার সব সমস্যা আমার পিছনে।" পরের বছর বসন্তকালে ব্রেট পুনরায় হেমোরয়েডের শল্য চিকিৎসা করান। রক্ষণশীল চিন্তাধারার রাজনৈতিক ভাষ্যকার গ্লেন বেক হেমোরয়েডের শল্যচিকিৎসা করানোর পর তার অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতার কথা ২০০৮ সালে ইউটিউব-এ একটি ভিডিওতে বর্ণনা করেন যা অনেকেই দেখেছেন।


Новое сообщение